বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, ‘বাংলাদেশে একটিমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, যার কপাল জুড়ে ইসলামের নাম রয়েছে; সেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যদি ইসলামকে বিজয় করার ভূমিকা রাখতে না পারে, তাহলে নাম পাল্টে ফেলেন। দেশে জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা যেই শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তা হলো ‘ইসলাম’। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আগাগোড়া সম্পূর্ণ জায়গায় ইসলামকে ধারণ করা চাই। আর তা করতে না পারলে এই বিশ্ববিদ্যালয় নামের কোনো সার্থকতা নেই।’
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ‘জুলাই পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তিনটি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমত, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ১৯০ বছর সংগ্রাম করতে হয়েছে। দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গের আধিপত্যের বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার লড়াই করতে হয়েছে। তখন রবীন্দ্র বাবুরা পূর্ব বাংলা, ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঠেকিয়ে দিতে সহিংস আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। আর যারা ঘোষণা দিয়ে সহিংস আন্দোলন করে, তাদেরকে জঙ্গি বলা হয় না; কিন্তু ইসলামের কথা বলা হলে জঙ্গিবাদ বলা হয়। আর সর্বশেষ, পশ্চিম পাকিস্তানের আধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমরা ৭১’র বিজয় অর্জন করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সকল শ্রেণির যুব সমাজের মধ্যে এক অভূতপূর্ব জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, তারা সব ধরনের সমাজ ব্যবস্থাই দেখেছে। তারা সোনার বাংলাদেশ, নতুন বাংলাদেশ, সবুজ বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ দেখেছে। এখন ইসলামের বাংলাদেশ দেখা বাকি আছে। তরুণ সমাজের মধ্যে একটাই আকাঙ্ক্ষা— তারা বিজয়ী ইসলামি আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থা দেখতে চায়। কারণ, এ পর্যন্ত কোনো আদর্শ ব্যবস্থাই তাদের আত্মিক প্রশান্তি এনে দিতে পারেনি।’
মামুনুল হক বলেন, ‘একজন মানুষকে গুম করা কত ভয়ঙ্কর, তা সম্প্রতি আয়না ঘরের দৃশ্য প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গরা উন্মোচন করেছে। আমরা সেই যুগে ফিরে যেতে চাই না। বিগত সময়ে যত জুলুম–নির্যাতিত হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফ্যাসিবাদের আমলে নির্যাতিত হয়েছে ইসলাম। ইসলামের সাথে যাদের সম্পর্ক ছিল তারাই চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছে। অন্যান্য মানুষের ওপর একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু তার থেকেও ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামী ব্যক্তিদের বহু গুনে নির্যাতন করা হয়েছে। এত নির্যাতনের পরেও এই আওয়ামী লীগকে যদি এ দেশ ক্ষমা করে দেয়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা কখনোই এদের ক্ষমা করবে না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো ওবায়দুল ইসলাম, আলোচিত বক্তা আব্দুল হাই মো. সাইফুল্লাহ ও অন্যান্য সংগঠনের ছাত্র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।