আমরা যাদের ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ বলি, তারা বিদেশে কাজ করে উপার্জিত টাকা দেশে পাঠান। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসে কাজ করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭%। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সত্ত্বেও তাদেরকে দেশে অনেক ক্ষেত্রে অবহেলার সম্মুখীন হতে হয়।
দেশে ফেরার পথে পাসপোর্ট অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় হয়রানির শিকার হন তারা। পরিবারেও তাদের অনেকে অবহেলা পান ও প্রতারিত হয়ে থাকেন। এক সৌদি প্রবাসীর ঘটনা এ প্রসঙ্গে তুলে ধরা যেতে পারে। প্রায় ২০ বছরের প্রবাস জীবনে নিজের পরিবারকে সুখে রাখার জন্য অনেক অর্থ উপার্জন করেন, যা তার স্ত্রী—সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু পরে তার স্ত্রী অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে সংসার শুরু করেন। একইভাবে, সিঙ্গাপুর প্রবাসী এক ব্যক্তির করুণ পরিণতি আমাদের ব্যথিত করেছে। দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরার পর তিনি নিখেঁাজ হন এবং তার লাশ বাড়ির পাশের সেতুর নিচে পাওয়া যায়। জানা যায়, পারিবারিক কলহের কারণে তাকে হত্যা করা হয়। এরকম ঘটনা আমাদের প্রশ্নের মুখে ফেলে, প্রবাসীরা কি শুধুই অর্থের উৎস, নাকি তাদের জীবনের মূল্যও রয়েছে?
২০২২—২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৬%। আমরা আশা করি, রেমিট্যান্স যোদ্ধারা শুধুই টাকার মেশিন হিসেবে বিবেচিত হবেন না। তাদের আত্মত্যাগ ও পরিশ্রমের যথাযথ সম্মান এবং তাদের প্রবাস পরবর্তী জীবনে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। দেশের একনিষ্ঠ যোদ্ধা হিসেবে তারা সমাদৃত হোক।
রোকেয়া সুলতানা
শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ