বর্তমান বিশ্বে ‘ওয়েবসাইট’ হলো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিচ্ছবি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর সিলেবাস, গবেষণা, টিউশন ফি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা সম্পর্কিত নানা তথ্য থাকে। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ওয়েবসাইট যেন তথ্য সংকটে জর্জরিত! নেই কোনো হালনাগাদ তথ্য। তাছাড়া ওয়েবসাইটও অগোছালো; নেই আধুনিকতার ছোঁয়া।
ইবির (www.iu.ac.bd) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে দেখা যায় যে, এতে অন্তত ১২টি বিভাগ সম্পর্কে কোনো পর্যালোচনা নেই। সাধারণত একজন শিক্ষার্থী পছন্দের বিভাগ সম্পর্কিত তথ্য ওয়েবসাইট থেকে নিয়ে থাকে। তবে ইবির ওয়েবসাইটে নেই কোনো হালনাগাদ তথ্য। তাছাড়া শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, তাদের ফরমাল ছবি, সিভি ও প্রকাশিত জার্নালের বিস্তারিত তথ্যও নেই।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়েবসাইটে আলাদা প্রোফাইল নেই। যেখানে শিক্ষার্থীর রেজাল্টসহ যাবতীয় তথ্য থাকার কথা। আর দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অন্যতম আকর্ষণ হলো র্যাংকিং, যা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করা হয়। র্যাংকিং সম্পর্কেও নেই কোনো তথ্য।
ইবির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, আবাসিক হলগুলোর প্রভোস্ট, আবাসন ব্যবস্থা, সামাজিক সংগঠন এবং পরিবহন সম্পর্কে এতে হালনাগাদ তথ্য নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই, বিভিন্ন জার্নাল, ই-বুক, দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অনার্স, মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি ও স্কলারশিপ সম্পর্কিত তথ্য নেই। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যে ব্যক্তিগত যোগাযোগের নাম্বার দেওয়া থাকে, তাও সচল নয়। এছাড়া, এই আধুনিক যুগেও ওয়েবসাইটে সকল নোটিশ ছবি আকারে আপলোড করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটের মান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানামুখী সমালোচনা করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এ এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজনে ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত নম্বরে যখন যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, তখন দেখা যায় নম্বারগুলো সচল না। ফলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ পর্যন্ত ক্যাম স্ক্যানার দিয়ে আপলোড করা হয়। যা প্রযুক্তির এই যুগে প্রশাসনের জন্য চরম অপমান! অন্যদিকে, সিনিয়র শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গেলেও তাদের সম্পর্কে কোনো আপডেট পাওয়া যায় না। অথচ তারা অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনার গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারতো।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহজাহান আলী দৈনিক মূলধারাকে বলেন, ‘বিগত সময়ে প্রসাশনে থাকা ব্যক্তিদের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজের কারণেই মূলত আমাদের কাজে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়েছে। আইসিটি সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান, শিখন, গবেষণা ও প্রশাসনিক লক্ষ্যসমূহকে সহায়তা করার জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তি পরিষেবা দিয়ে থাকে। বর্তমানে আইডি কার্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছি। অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল তথ্য নিয়ে কাজ করবো।’